কোভিড-১৯ এর প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশ। গেল সোমবার (২৯ জুন) চীন দাবি করেছে, তারা একটি সফল ভাইরাস আবিষ্কার করেছে। ভাইরাসটি এক বছরের জন্য দেশটির সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে এবার বাংলাদেশেও প্রথম করোনার টিকা (ভ্যাকসিন) আবিষ্কারের দাবি করেছে অন্যতম ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড। বুধবার (০১ জুলাই) প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, তারা পশুর শরীরে এই ভ্যাকসিনের সফলতা পেয়েছেন। মানবদেহেও এর সফলতা পাওয়া সম্ভব বলে আশা করছেন তারা।
Read More News
গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের রিসার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান ডা. আসিফ মাহমুদ দেশের একটি শীর্ষ দৈনিকের অনলাইনে দেয়া বক্তব্যে বলেন, ‘আসলে আমরা কাজ শুরু করার পর প্রাথমিকভাবে এটা নিয়ে সফল হয়েছি। এনিমেল মডেলে এটা সফল হয়েছে। এখন আমরা আশা করি মানবদেহেও এটা সফলভাবে কাজ করবে। আমরা বিষয়টি নিয়ে এখন সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কাছে যাব। এরপর তাদের দেওয়া গাইডলাইন অনুযায়ী পরবর্তী ধাপগুলো সম্পন্ন করবো৷’
বিষয়টি নিয়ে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড একটি বিবৃতিও দিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এনসিবিআই ভাইরাস ডাটাবেজ অনুযায়ী মঙ্গলবার (৩০ জুন) পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৫ হাজার ৭৪৩টি সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স জমা হয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশ থেকে জমা হয়েছে ৭৬টি। উক্ত সিকোয়েন্স বায়োইনফরম্যাটিক্স টুলের মাধ্যমে পরীক্ষা করে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড তাদের টিকার টার্গেট নিশ্চিত করে। যা যৌক্তিকভাবে এই ভৌগোলিক অঞ্চলে অধিকতর কার্যকরী হবে বলে আশা করছেন তারা।
প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, উক্ত টার্গেটের সম্পূর্ণ কোডিং সিকোয়েন্স যুক্তরাষ্ট্রের এনসিবিআই ভাইরাস ডাটাবেজে জমা দিয়েছেন যা ইতিমধ্যেই এনসিবিআই কর্তৃক স্বীকৃত ও প্রকাশিত হয়েছে।
টিকা আবিষ্কারের বিষয়ে আরও বলা হয়, গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের গবেষণাগারে আবিষ্কৃত টিকাটির বিশদ বিশ্লেষণের পর ল্যাবরেটরি এনিমেল মডেলে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করে যথাযথ এন্টিবডি তৈরিতে সন্তোষজনক ফলাফল পেয়েছেন বলে দাবি করছেন তারা।
বিষয়টি নিয়ে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এই টিকাটির সুরক্ষা ও কার্যকারিতা নিরীক্ষার লক্ষ্যে আমরা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এই সুরক্ষা ও কার্যকারিতা পরীক্ষায় সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি।
টিকা আবিষ্কার নিয়ে বৃহস্পতিবার (২ জুন) দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানাবে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড।
গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের সিইও ড. কাকন নাগ এবং সিওও ড. নাজনীন সুলতানার সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি। তারা গবেষণার পাশাপাশি কোভিড-১৯ ‘শনাক্তকরণ কিট, টিকা এবং ওষুধ’ আবিষ্কার সংক্রান্ত গবেষণা কর্মকাণ্ড শুরু করেছে।
গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড ২০১৫ সালে ক্যানসার, আর্থ্রাইটিস, রক্তস্বল্পতা, উচ্চ রক্তচাপ, অটোইমিউন ডিজিজসহ অন্যান্য দুরারোগ্য রোগ নিরাময়ের জন্য বায়োলজিক্স, নোভেল ড্রাগ এবং বায়োসিমিলার উৎপাদনের লক্ষ্যে অত্যাধুনিক গবেষণাগার স্থাপনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে।