বাংলাদেশ-নেপালের মধ্যে যে ট্রানজিট চুক্তি হয়েছিল, সেটি সংশোধন করে রেলপথে নেপালকে ট্রানজিট সুবিধা দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এই সংশোধনীর প্রস্তাব অনুমোদন পেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোহানপুর থেকে ভারতের সিঙ্গাবাদ হয়ে নেপালের বীরগঞ্জ পর্যন্ত রেলপথে পণ্য পরিবহন সুবিধা চালু হবে।
Read More News
সোমবার (১০ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘অ্যাডেনডাম টু দ্য প্রটোকল টু দ্য ট্রানজিট এ অ্যাগ্রিমেন্ট বিটুইন দ্য গভর্নমেন্ট অব দ্য পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ অ্যান্ড দ্য গভর্নমেন্ট অব দ্য ফেডারেল ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব নেপাল’-এর খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ছয়জন মন্ত্রী এ বৈঠকে সংযুক্ত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানায়, বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে যে ট্রানজিট চুক্তি হয় ১৯৭৬ সালে, সেখানে দুই দেশের মধ্যে ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ৬টি রুটকে অন্তর্ভুক্ত করা আছে। তবে ওই রুটগুলোর মাধ্যমে পণ্য পরিবহনে দূরত্ব বেশি হওয়ায় নেপালের জন্য ব্যয়ও বেশি হচ্ছে। ফলে দেশটি দীর্ঘদিন থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোহানপুর দিয়ে রেলপথে পণ্য পরিবহনে ট্রানজিট সুবিধা চেয়ে আসছিল। এখন ভারতের সম্মতি পাওয়ার পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোহানপুর রেলস্টেশনকে প্রচলিত ৬টি রুটের অতিরিক্ত নতুন আরেকটি ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ট্রানজিট চুক্তি সংশোধনের প্রস্তাব যাচ্ছে মন্ত্রিসভায়।
জানা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে পণ্য পরিবহনে যে ৬টি প্রটোকল রুট রয়েছে তার মধ্যে বিরল-রাধিকাপুর দিয়ে পণ্য পরিবহনে ৫১৪ কি.মি. এবং বেনাপোল দিয়ে নেপালের বীরগঞ্জ পর্যন্ত পণ্য পরিবহনে প্রায় ৮০০ কিমি. পথ অতিক্রম করতে হয়। নতুন ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে রোহানপুর-সিঙ্গাবাদ অনুমোদন পেলে এই পথে নেপালের বীরগঞ্জ পর্যন্ত পণ্য পরিবহনে সর্বমোট দূরত্ব দাঁড়াবে ২১২ কি.মি.। দূরত্ব কমে যাওয়ায় পণ্য পরিবহনে নেপালের খরচ এক তৃতীয়াংশে নেমে আসবে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, রেল ট্রানজিটটি বাস্তবায়িত হলে বঙ্গোপসাগর দিয়ে পণ্য আমদানি করে মোংলা বন্দরে খালাসের পর সেটি খুলনা হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোহানপুর স্থলবন্দরে আনতে চায় নেপাল। এতে নেপালের পণ্য পরিবহনে ব্যয় কমার পাশাপাশি মোংলা বন্দর ব্যবহারের চার্জ ও মাশুল ছাড়াও রোহানপুর পর্যন্ত দেশীয় যান ব্যবহার করে নেপালি পণ্য পরিবহন বাবদ অর্থ পাবে বাংলাদেশ।