ছোট পর্দার অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন দীর্ঘ নয় মাসের আইনি লড়াই শেষে পেয়েছেন মেয়ের অভিভাবকত্ব।
২০১৭’র ৩ আগস্ট মেয়ের কাস্টডি চেয়ে মামলা করেছিলেন বাঁধন। ঢাকার দ্বাদশ সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক সোমবার সকালে দেওয়া রায়ে বলেছেন, কন্যাশিশুর অভিভাবক হচ্ছেন মা। মায়ের জিম্মায়ই মেয়ে থাকবে। কন্যার সর্বোত্তম মঙ্গলের জন্য মায়ের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এই রায়ে আরও বলা হয়, কন্যাশিশুকে নিয়ে মা দেশের ভেতরে এবং বাইরে যেতে পারবেন, যেহেতু মা-ই কন্যাশিশুর অভিভাবক।
Read More News
নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে দেয়া ফেসবুক পোস্টে বাঁধন লিখেছেন, ‘আজ ৩০ এপ্রিল ২০১৮ ইং তারিখ, দ্বাদশ সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালত, (ঢাকা) যে আদেশ আমার মামলায় দিলেন, তা একটি যুগান্তকারী রায় এবং আদালত পাড়ায় মাইলফলক। আইনজীবীরা বললেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, এই উপমহাদেশ এটি বিরল উদাহরণ হয়ে থাকবে।’
তিনি আরও লিখেন, ‘মাননীয় আদালত আজকে আদেশ দিয়েছেন কন্যা শিশুর অভিভাবক হচ্ছেন মা। মায়ের জিম্মায়ই মেয়ে থাকবে। বাবা মাসে কেবল দুই দিন মায়ের বাড়িতে গিয়ে মায়ের উপস্থিতিতে মেয়েকে দেখে আসবেন, কিন্তু কন্যার সর্বোত্তম মঙ্গলের জন্য মায়ের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত । অর্থাৎ, মাননীয় আদালত সাধারণ ‘কাস্টডি’ নয়, বরং সম্পূর্ণ ‘গার্ডিয়ানশিপ’ আমাকে দিয়েছেন।’
২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর মাশরুর সিদ্দিকীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহবিচ্ছেদ হয় বাঁধনের। কিন্তু ২০১৭’র মাঝামাঝি বাঁধন গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন তার সাবেক স্বামী মেয়ে মিশেল আমানি সায়রাকে নিয়ে যান তার কাছে। এরপর জোর করে মেয়েকে কানাডায়ও নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন মাশরুর। সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে মেয়ের পাসপোর্ট আটকে রাখার অভিযোগও করেন বাঁধন। তখন মেয়ের অভিবঅবকত্ব চেয়ে আদালতে মামলা করেছিলেন তিনি।
বাঁধন তার ফেসবুক পোস্টে আরও জানান, ‘বাবা তার কন্যা শিশুর পাসপোর্ট আটকে রেখেছেন । বিজ্ঞ আদালত সেটা ফেরত দিতে নির্দেশ দিলেন । যদি বাবা না দেন, তবে বাদীকে থানায় জি.ডি করতে বলেছেন এবং নতুন পাসপোর্ট দেবার জন্য পাসপোর্ট অফিসে বিজ্ঞ আদালত চিঠি ও আদেশ পাঠিয়ে দেবেন বলেও জানালেন। কন্যা শিশুকে নিয়ে মা দেশের ভেতরে এবং বাইরে যেতে পারবেন যেহেতু মা’ই কন্যা শিশুর অভিভাভবক।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘একটি বিশেষ দিক না উল্লেখ করলেই নয় : সামান্য যে ৫ লক্ষ টাকার দেন মোহর – সে’টির কোন দাবী আমি করিনি, কন্যার ভরণ-পোষণ বাবা এতদিন করেননি, কোন খোরপোষ দেননি, আমি চাইওনি এবং সেটা প্রকাশ্য আদালতেই আজকে বলেছি । বাবা’র কাছে ভরণপোষণ – এ’টা প্রতিটা মেয়ের অধিকার, মেয়ের দেখভাল করা প্রতিটি বাবারই দ্বায়িত্ব । সেই কাজটা এতদিন আমিই করে এসেছি – তিনি করবেন কিনা, সেটা তারই বিবেচনায় থাক।’
সাবেক লাক্স সুপারস্টার বাঁধন ২০১০ সালে বিয়ে করেন ব্যবসায়ী মাশরুর সিদ্দিকীকে। পরবর্তীতে জন্ম নেয় তাদের একমাত্র কন্যা সায়রা।